বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৪ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি ড. আশরাফুর রহমান চেয়ারে বসে আছেন। তার সামনে হইচই করছেন ১৫/২০ জন যুবক । কেউ উচ্চ স্বরে ধমকাচ্ছেন, কেউবা জবাব চাচ্ছেন, কেউবা অভিযোগ করছেন বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে , কেউবা প্রশ্ন করে আসামি কেন ধরা হচ্ছে না তার জবাবও চাচ্ছেন।
এমনই একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে । ঘটনাটি গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ সালের।যা নিয়ে আলোচনা গড়িয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর পর্যন্ত। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ময়মনসিংহের নাগরিক সমাজ তীব্র নিন্দা ও তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ড. আশরাফুর রহমানের ভাষ্য, জাসদ নেতা শফিকুল ইসলাম মিন্টু কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয়ে কিছু লোকজন তার কক্ষে ঢুকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ডিআইজি বলেন, এ ঘটনার তদন্ত চলছে। প্রতিবেদন আসার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ময়মনসিংহের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক গোকূল সূত্রধর মানিক বলছেন, তাদের কেউ সেখানে যায়নি। ডিআইজি আশরাফুর বলেন, এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৯ জনের যে কমিটি আছে তারা আমার অফিসে এসেছিল। তারা বলেছে, ওরা তাদের লোক নয়। এই ধরনের ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তারা।
এ ঘটনার আলোচনা চলছে পুলিশের অন্যান্য দপ্তরেও। বৃহস্পতিবার তথ্যের প্রয়োজনে ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি হতাশার সুরে ভিডিওটি দেখিয়ে বলেন, “এইভাবে চলতে থাকলে কাজ করব কীভাবে? পুলিশ সদর দপ্তরেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে মন্তব্য করতে চাননি কেউ।
ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার ৭ মিনিট ৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ময়মনসিংহেরে রেঞ্জ ডিআইজির কক্ষের সামনে স্লোগান দিতে দিতে একদল ব্যক্তি ডিআইজির আশরাফুরের কক্ষে ঢুকে পড়েন। তাদের মধ্যে দুজন নিজেদের আয়াত ও মেহেদি পরিচয় দিয়ে সবার পক্ষে কথা বলতে শুরু করেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তারা সাবেক মেয়র টিটু অনুসারী। অধিকাংশ যুবক ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। অনেকের আছে পদ পদবীরেও।
তাদের সঙ্গে ডিআইজির কথপোকথনের এক পর্যায়ে সেখানে ঢুকে পড়া ব্যক্তিরা ময়মনসিংহে একটি খুনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে কথা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে বলেন, ”আপনারা আওয়ামী লীগ নেতাদের না ধইরা আপনারা ধরতেছেন কারে? এমন প্রশ্ন করে কক্ষে থাকা পুলিশ সদস্যদের সাথে অশালীন আচরণ শুরু করেন। পুলিশ ধৈর্য সহকারে তাদের সাথে কথা বলেন। যুবকরা বলেন, এরকম নৌকার লোকদের না ধইরা জাসদের নেতা একটা ছোট্ট অপরাধ করছে এই লোকদের ধইরা…আনছেন কেন?
এ বিষয়ে ডিআইজি আশরাফুর রহমান বলেন, মূলত ঘটনাটা ঘটেছে সাগর হত্যা মামলায় সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু নামে জাসদের (ইনু) একজন কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তারের বিষয় নিয়ে। তাকে ছাড়াতে চাপ দিতেই এসেছিল।
এরা এসেছিল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য, আমাদের হুমকি দিতে। এরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নয়, এরা আসলে বৈষম্য গ্যাং।”তিনি বলেন, “তাদের আরেকটা দাবি হচ্ছে সিটি করপোরেশনের অন্যান্য কাউন্সিলর যারা অতীতে ছিল তাদের যেন আমরা না ধরি। ভবিষ্যতে যেন এরকম গ্রেপ্তার না করি এটার বিষয়ে আমাদের সতর্কবাণী উচ্চারণ করে। তাদের দাবি সাগর হত্যা মামলার আরো যে আসামি আছে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।“